নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী আজ থেকে প্রথম ধাপে দেশের ১৩৯টি উপজেলায় ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। যা চলবে আগামী ৯ জুন পর্যন্ত।
এবার প্রায় তিন বছর পর শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম। নির্বাচন কমিশন এবার ৮৪ লাখ নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তির টার্গেট নিয়ে মাঠে নেমেছে। ২০০৭ সালের জানুয়ারির আগে যাদের জন্ম তারাই তালিকাভুক্ত হবেন এই হালনাগাদে।
শুক্রবার (২০ মে) সকালে সাভার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম ২০২২’ উদ্বোধন করবেন।
ইসি জানায়, ভোটার তালিকার কাজ শুরুর পর ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম এমন নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এরপর ছবি, বায়োমেট্রিক ও চোখের আইরিশের জন্য কেন্দ্র ঠিক করে সেখানে নেওয়া হবে।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, করোনার কারণে গত বছর নতুন ভোটারদের তথ্য নিতে পারেনি ইসি। এবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারযোগ্য নাগরিকদের তথ্য নেওয়া হবে।
ইসির হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গত ২ মার্চ পর্যন্ত দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ জন, নারী ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন। এ হিসাবে এখন দেশে মোট ভোটারের ৫০ দশমিক ৯২ শতাংশ পুরুষ আর নারী ৪৯ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। গত এক বছরে (১৯ জানুয়ারি, ২০২২ পর্যন্ত) নতুন ভোটার হয়েছেন ১৪ লাখের কিছু বেশি। এর ৬৯ শতাংশই পুরুষ, নারী মাত্র ৩১ শতাংশ।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, ভোটার হওয়া একটি চলমান প্রক্রিয়া। যে কেউ নির্বাচন কমিশনে গিয়ে তথ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে ভোটার হতে পারেন। তবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার করলে সহজেই ভোটার হওয়া যায়। কোনো তদন্ত লাগে না। নির্ভুল এনআইডি পেতে ভোটারদের লক্ষ্য রাখতে হবে ফরম-২’তে। এখানে তথ্য ভুল দিলে জাতীয় পরিচয়পত্রেও ভুল আসবে। এ সময়ের মধ্যে ভোটারের এলাকার স্থানান্তর করতে পারবেন। আর মৃত ভোটারদের নামও তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।
যে ১৩৯টি উপজেলায় প্রথম ধাপে তথ্য সংগ্রহ করা হবে
ঢাকা অঞ্চলের মানিকগঞ্জ জেলার সদর ও শিবালয়, মুন্সীগঞ্জ জেলার সদর ও গজারিয়া, নরসিংদী জেলার শিবপুর ও পলাশ, নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর ও আড়াইহাজার, ঢাকা জেলার দোহার, নবাবগঞ্জ, কেরাণীগঞ্জ, সাভার, সুত্রাপুর, কোতয়ালী ও ডেমরা, গাজীপুর জেলার শ্রীপুর, কালীগঞ্জ ও কাপাসিয়া।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ডু, সন্দ্বীপ, কর্ণফুলী, লোহাগড়া, পটিয়া ও আনোয়ারা, কক্সবাজার জেলার মহেশখালী, রামু, চকরিয়া ও কুতুবদিয়া, খাগড়াছড়ি জেলার সদর, মহালছড়ি ও লক্ষ্মীছুড়ি, রাঙ্গামাটি জেলার সদর এবং বান্দরবান জেলার সদর উপজেলা।
সিলেট অঞ্চলের সুনামগঞ্জ জেলার সদর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ ও বালাগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলার সদর ও শ্রীমঙ্গল, হবিগঞ্জ জেলার সদর ও বাহুবল।
কুমিল্লা অঞ্চলের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর, নাসিরনগর, কুমিল্লা জেলার লালমাই, বরুড়া, লাকসাম, হোমনা ও বুড়িচং, চাঁদপুর জেলার কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ, ফেনী জেলার সদর ও ফুলগাজী, নোয়াখালী জেলার সদর, কোম্পানীগঞ্জ ও সেনবাগ, লক্ষ্মীপুর জেলার সদর ও রামগতি।
ময়মনসিংহ অঞ্চলের টাঙ্গাইল জেলার সদর, সখিপুর ও ঘাটাইল, জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ ও মাদারগঞ্জ, শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী, ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া, ভালুকা, ঈশ্বরগঞ্জ, গফরগাঁও, নেত্রকোনা জেলার সদর ও কলমাকান্দা, কিশোরগঞ্জ জেলার সদর, কটিয়াদি ও তাড়াইল।
খুলনা অঞ্চলের মেহেরপুর জেলার গাংনী, কুষ্টিয়া জেলার সদর ও কুমারখালী, চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর, ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ ও হরিণাকুণ্ডু, যশোর জেলার সদর, অভয়নগর ও বাঘারপাড়া, মাগুড়া জেলার সদর, নড়াইল জেলার সদর, বাগেরহাট জেলার সদর ও শরণখোলা, খুলনা জেলার সদর, সোনাডাঙ্গা ও দৌলতপুর, সাতক্ষীরা জেলার সদর ও তালা।
ফরিদপুর অঞ্চলের গোপালগঞ্জ জেলার সদর ও টুংগীপাড়া, মাদারীপুর জেলার সদর, শরিয়তপুর জেলার সদর ও ডামুড্যা, ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা ও সদরপুর, রাজবাড়ী জেলার সদর।
রংপুর অঞ্চলের পঞ্চগড় জেলার সদর, ঠাকুরগাঁও জেলার সদর, দিনাজপুর জেলার সদর ও নবাবগঞ্জ, নীলফামারী জেলার সদর ও ডিমলা, লালমনিরহাট জেলার সদর, রংপুর জেলার সদর ও পীরগঞ্জ, গাইবান্ধা জেলার সদর ও ফুলছড়ি।
রাজশাহী অঞ্চলের জয়পুরহাট জেলার সদর, বগুড়া জেলার সদর, দুপচাঁচিয়া ও সারিয়াকান্দি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট, নওগাঁ জেলার সদর, পোরশা ও বদশগাছি, রাজশাহী জেলার বোয়ালিয়া ও রাজপাড়া, নাটোর জেলার সদর ও সিংড়া, সিরাজগঞ্জ জেলার সদর ও তাড়াশ, পাবনা জেলার সদর ও ঈশ্বরদী।
বরিশাল অঞ্চলের বরগুনা জেলার সদর ও আমতলী, পটুয়াখালী জেলার সদর ও গলাচিপা, ভোলা জেলার সদর ও মনপুরা, বরিশাল জেলার সদর, আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী, ঝালকাঠী জেলার সদর, পিরোজপুর জেলার ও নেছারাবাদ।