ধান কাটার মৌসুম চলছে। ধানের সরবরাহেও কমতি নেই। তারপরও চালের বাজারে গত ২ সপ্তাহে ধরে দাম বেড়েই চলেছে। এ নিয়ে মিল মালিক, পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা একে অন্যের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন। তবে ঘুরেফিরে আলোচনায় সেই সিন্ডিকেট। পুরনো এ সমস্যা সমাধান না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। মোটা চালের দামও চলে গেছে দরিদ্রদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। খোদ খাদ্যমন্ত্রীও বুঝতে পারছেন না, ভরা মৌসুমে চালের দাম কেন বাড়ছে, নতুন ধান কোথায় যাচ্ছে।
সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চালের বাজারে বিশেষ নজর দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় পেছনে কারও কারসাজি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার নির্দেশও দিয়েছেন। এরপরেই চালের দাম নিয়ন্ত্রণে জোর অভিযান চলছে। পাশাপাশি চাল আমদানির কথা চিন্তা করছে সরকার। আমদানির অনুমতি দিলে বাজারে অন্তত চালের সংকট থাকবে না। এতে চালের দাম কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, অভিযানেও যদি চালের সংকট নিয়ন্ত্রণে না আসে তাহলে আমদানির অনুমতি দেব। সব মিলিয়ে চালের বাজার স্বাভাবিক রাখাই এখন অন্যতম কাজ।
এদিকে গত সোমবার খাদ্যমন্ত্রী মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক কর্মকর্তা জানান, কয়েক দিনের মধ্যেই বড় বড় মিলগুলোয় অভিযান শুরু হবে। প্রয়োজনে মিল বন্ধ করে দেয়া হবে নতুবা চালের একটি দাম নির্ধারণ করে দেয়া হবে, যে দামে মিলগেট থেকে চাল বিক্রি করতে হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মজিবুর রহমান জানান, ঢাকার বড় বড় চালের বাজারগুলোতে অভিযান চালাবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি টিম। পাশাপাশি খাদ্য অধিদপ্তরের পাঁচটি টিমও কাজ করবে। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও অভিযান চলবে। অবৈধ মজুদ পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া অভিযানের সার্বিক দেখভালের জন্য মন্ত্রণালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম চালু করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে আজ (বুধবার) খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশের বাজার থেকে চাল কিনে প্যাকেটজাত করে তা আবার বিক্রি করা যাবে না। এজন্য একটি সার্কুলার জারির চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রত্যেক চালের বাজারে, আড়তে এবং মিলে এমনটি গ্রামাঞ্চলেও কৃষক ছাড়া কেউ যদি ধান কিনে মজুত রাখে সেখানেও অভিযান চালানো হচ্ছে। এটা ধারাবাহিকভাবে চলবে।