চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে মারা যাওয়া ৪১ জনের মধ্যে ২৬ জনের পরিচয় শনাক্ত করে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৫ জনের মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
মঙ্গলবার (৭ জুন) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তবে চট্টগ্রামের মেডিকেলের তথ্যমতে, বিস্ফোরণে মারা গেছে ৪২ জন। এর মধ্যে ২৬ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৬ জনের মরদেহ ফ্রিজিং করা হয়েছে। পাশাপাশি ৩৯ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি।
জেলা প্রশাসন থেকে জানা গেছে, এ ঘটনায় ২৩০ জন আহত হয়েছেন। তাদের ১৫ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী এবং ১০ জন পুলিশ সদস্য।
এদিকে, সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ঘটনায় যাদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি তাদের এবং যেসব স্বজন বলছেন যে তাদের স্বজনদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাদের থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
সোমবার ২১ জনের খোঁজে ৩৬ জন স্বজন নমুনা দিয়েছেন। মঙ্গলবার আরও তিনজন স্বজন নমুনা দিয়েছেন। সারাদিনের অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেব আমরা বুধবার পর্যন্ত থাকব কি না। আমাদের সিআইডির টিম চলে যাওয়ার পর কোনো স্বজন নমুনা দিতে চাইলে ঢাকায় গিয়ে দিতে হবে।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঘটনাস্থলে দেখা যায়, শাহনাজ আক্তার নামে এক নারী তার স্বামী আতিকুল ইসলামের খোঁজে এসেছেন। না পেয়ে তিনি ডিএনএ নমুনা দিয়েছেন।
মৃতদের মধ্যে পরিচয় শনাক্ত হওয়া ২৬ জনের মধ্যে ২৩ জন হলেন– কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানাধীন সাতবাড়িয়া সামারা এলাকার শামসুল হকের ছেলে মনিরুজ্জামান (৫০), ভোলা জেলার সদর থানাধীন দক্ষিণ কালিয়া এলাকার হাবিবুর রহমান (২৩), বাঁশখালী উপজেলার চনুয়া মধুখালী এলাকার আবদুল মজিদের ছেলে রবিউল আলম (২৪), একই এলাকার ফরিদুল আলমের ছেলে মমিনুল হক (২৪), বাঁশখালী উপজেলার চারিয়াপাড়া এলাকার মাহমুদুর রহমানের ছেলে মহি উদ্দিন (২২), বাঁশখালী উপজেলার নাপুরা এলাকার হাসান আলীর ছেলে তোফায়েল ইসলাম (২২), নোয়াখালী জেলার টাটখীল থানাধীন শোল্লা বানসা এলাকার আবদুর রশিদের ছেলে আলাউদ্দিন (৩৫), সীতাকুণ্ড উপজেলার মধ্যম মহাদেবপুর এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে মো. সোলাইমান, নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানাধীন নিজাম উদ্দিনের ছেলে মো. সুমন (২৮), যশোর বাঘারপাড়া থানাধীন নরসিংপুর এলাকার আবুল কাসেমের ছেলে ইব্রাহিম (২৭), পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ী থানাধীন তুসখালী এলাকার মৃত সাত্তার জমাদ্দারের ছেলে ফারুক জমাদ্দার (৫০), চট্টগ্রামের হালিশহর থানাধীন নারিকেলতলা দক্ষিণ হালিশহর এলাকার আব্দুস সবুরের ছেলে হারুন অর রশিদ (৫৫), মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানাধীন পুটিকলিন এলাকার মো. আছির ছেলে মো. নয়ন (২২), চট্টগ্রামের মীরসরাই থানাধীন সোনাপাহাড় এলাকার ননামিয়া বাড়ির শাহজাহানের ছেলে শাহাদাত হোসেন (২৯), ফেনী জেলার ফুলগাজী থানাধীন আনন্দপুর এলাকার আমিন উল্লাহ জমাদ্দারের ছেলে শাহাদাত উল্লাহ জমাদ্দার, চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানাধীন পূর্ব চালিয়াপাড়া এলাকার জাফর মাহমুদের ছেলে মো. রিদুয়ান (২৫), চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ থানাধীন কালাপানিয়া এলাকার মোবাসের ইসলামের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম (৪১), ফেনী সদর থানাধীন নাসিমপুর এলাকার আবু ইউসুফের ছেলে সালা উদ্দিন কাদের চৌধুরী (৪২), খুলনার শুকধারা এলাকার আব্দুস সাত্তারের তরফদারের ছেলে শাকিল তরফদার (৪৫), রাঙ্গামাটি সদরের কাজাচুরা এলাকার চিত্তরঞ্জন চাকমার ছেলে নিপন চাকমা (৪৫), মানিকগঞ্জ শিবালয় এলাকার মো. পান্না মিয়ার ছেলে রানা মিয়া (২২), হালিশহর থানাধীন আব্দুস সবুরের ছেলে মো. হারুন (৫৫) এবং শেরপুর সদরের মো. আকরাম হোসেনের ছেলে রমজানুল ইসলাম রনি।