ঢাকাWednesday , 8 June 2022

ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যালে ডুবে আছে চট্টগ্রাম বন্দর

Zero News
June 8, 2022 11:36 am
Link Copied!

চট্টগ্রাম বন্দর জেটিসমূহ ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যালের মধ্যে ডুবে আছে। চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি এলাকায় বিভিন্ন শেডে ২৬২ কনটেইনারে কেমিক্যালসহ দীর্ঘকালের পুরাতন সামগ্রী রয়েছে। এর অনেকগুলোর তীব্র দাহ্য প্রকৃতির। কনটেইনারগুলো দীর্ঘদিন ধরে নিলামে দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট করা হলেও এখনো পড়ে আছে। 

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মো. শাহজাহান ইত্তেফাককে জানান, কেমিক্যালবাহী কনটেইনারসহ অন্যান্য পণ্যবাহী কনটেইনার দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় বন্দর থেকে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে নিলামের জন্য। তিনি জানান, গতকাল মঙ্গলবারও এ সংক্রান্ত একটি চিঠি চট্টগ্রাম কাস্টমসকে দেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে ১০ থেকে ২০ বছরের পুরোনো কেমিক্যালসহ অন্যান্য পণ্য পড়ে আছে। অনেক পণ্যের কোন নির্দিষ্ট তথ্যও বন্দর ও কাস্টমসের নিকট নেই। এরপরও পণ্যবাহী কনটেইনারগুলো পড়ে আছে। যদিও কাস্টমস আইন ৩০ দিনের মধ্যে কেউ পণ্য ডেলিভারি না নিলে কাস্টমস তা নিলাম করতে পারে। অবশ্য কাস্টমসের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নিলামের ক্ষেত্রে মামলা এবং পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের ছাড়পত্র না পাওয়ার বিষয় বলা হয়। তাছাড়া পণ্যসমূহ মাটিতে পুঁতে ফেলা কিংবা ধ্বংস করার জন্য দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পন্নের কথা জানানো হয়। জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম কাস্টমসকে দেওয়া পত্রে বলা হয়, ঐসব কেমিক্যালসহ অন্যান্য পুরোনো পণ্যবাহী কনটেইনারের কারণে কোন প্রকার দুর্ঘটনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের ৬ নম্বর শেডে একটি কনটেইনারে থাকা পুরোনো কেমিক্যাল নিচে পড়ে ধোঁয়ার সৃষ্টি করলে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সব বোর্ড সদস্য এবং বিভাগীয় প্রধানগণ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বন্দরের ফায়ার বিভাগ ও নিরাপত্তা কর্মীরাও সতর্ক অবস্থান নেয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, নিলামের জন্য রাখা একটি পুরোনো কনটেইনারের ভেতর থেকে কেমিক্যাল চুইয়ে চুইয়ে নিচে পড়ছে। এতে করে এক প্রকার ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, তিন স্তরে থাকা উক্ত কনটেইনার খোলার জন্য ফর্ক লিফট ব্যবহার করা হয়। শেষ পর্যন্ত কনটেইনারের মুখ খুলে তাতে থাকা কেমিক্যালবাহী জার বের করা হয়। ঐ প্লাস্টিক জারে থাকা ইথাইল এসিটেট ২০১০ সালে ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছিল। এটি থিনার হিসেবে পেইন্টসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হয়। জানা যায়, তৃতীয় স্তরে কনটেইনার থেকে নিচে পড়তে থাকা কেমিক্যাল দ্বিতীয় স্তরের কনটেইনারে থাকা কাপড়েও পড়ছে। এ থেকেও দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়ে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সব উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার ফখরুল আলমসহ অন্য কর্মকর্তাদেরও ডাকা হয়।

এ ঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জরুরি এক গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডসমূহ, প্রাইভেট কনটেইনার ডিপোসমূহ এবং বিমানবন্দর থেকে রাসায়নিক পণ্যসহ অন্যান্য পণ্যভর্তি কনটেইনার নির্ধারিত সময়ে আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের খালাস নিতে হবে। বন্দর ও ডিপো থেকে ৩০ দিনের মধ্যে এবং বিমানবন্দর থেকে ২১ দিনের মধ্যে কিংবা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পণ্যসমূহ ডেলিভারি না নিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে পণ্যসমূহ নিলামে তোলা হবে।