ঢাকাThursday , 30 June 2022

কলাপাড়ায় আদালতে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি

Zero News
June 30, 2022 1:43 pm
Link Copied!

মো.নাহিদুল হক, কলাপাড়া প্রতিনিধি:

’প্রখর রোদ কিংবা অঝোর ধারার বৃষ্টিতে আদালত ভবনের ভেতরে, বাইরে বসা কিংবা দাড়ানোর কোন ব্যবস্থা নেই। সিড়িঁর নীচতলায় বৃষ্টির পানি জমে থাকায় সেখানেও দাড়ানোর সুযোগ নেই। তাই নীচ তলা থেকে তিন তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে গায়ে গায়ে ঘেঁষে দাড়িয়ে বিচার প্রার্থীদের অপেক্ষায় থাকা, কখন কার মামলায় ডাক পড়ে। যার ডাক পড়ে তাকে ভিড় ঠেলে এজলাসে প্রবেশ করতে হচ্ছে। এমনকি বিচারককে প্রবেশের জায়গা করে দিতে বলতে হচ্ছে বার বার।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের এ দৃশ্য এখন প্রতিদিনের।

জানা যায়, ১৯৮৩ সালে পৌরশহরের অফিস মহল্লা এলাকায় একতলা এ আদালত ভবনটি চালু করা হয়। শুরুতে ফৌজদারি বিচার কাজ পরিচালিত হতো এ চৌকি আদালতে।

১৯৮৬ সালে ভবনটির পুর্বদিকে মুনসেফ আদালত (সহকারী জজ আদালত) চালু হয়। পরে মুনসেফ আদালত সরিয়ে নেয়া হয়। পুনরায় ২০১১ সালের ২৪ এপ্রিল দেওয়ানি বিচার কাজের জন্য সহকারী জজ আদালতের কার্যক্রম চালু করা হয়।

তবে নিম্ন মানের উপকরন সামগ্রী দিয়ে ভবন তৈরীতে ২০১৬ সাল নাগাদ জরাজীর্ন ওই আদালত ভবনের দেয়াল, ভিম ও পিলার ভেঙ্গে পড়ে। কার্ণিশসহ ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ে। ফলে পুরো ভবনটিতে ফাটল দেখা দেয়। এরপর বিচারকের খাস কামরার সিলিং ফ্যান লোহার হুক সহ ছিটকে পড়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো: আনিছুর রহমান গুরুতর জখম হন। সেই থেকে ভাড়াটে আদালত ভবনে চলে উভয় আদালতের বিচারিক কার্যক্রম। প্রথমে কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের মৃধা কমপ্লেক্সের ভাড়াটে আবাসিক ভবনে চলে ক’বছর।

এরপর থেকে বর্তমান অবধি পৌরসভার পাশে পৌরসভার অব্যবহৃত স্বল্প পরিসরের পানি শাখা ভবনে চলে আসছে বিচার বিভাগের কার্যক্রম। যেখানে দূর দূরান্ত থেকে আসা বিচারপ্রার্থী মানুষের কষ্টের যেন শেষ নেই। বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধ ও নারী বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি বাড়ে রোদ, বৃষ্টিতে।

এছাড়া বিচারপ্রার্থীদের জন্য আদালত চত্বরে কোন শৌচাগার না থাকায় দূর্বিষহ অবস্থায় পড়তে হচ্ছে তাদের। এতে মামলায় ডাক পড়ার সাথে সাথে এজলাস কক্ষে অনুপস্থিতির কারনে পূর্ব জামিন বাতিল হলে ফের জামিন নিতে হচ্ছে বিচার প্রার্থীদের।

আদালত সূত্র জানায়, ফৌজদারী ও দেওয়ানী আদালতের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বসার জায়গা সংকুলান হচ্ছে না। মামলার গুরুত্বপূর্ন নথিপত্র রাখার তেমন ভালো জায়গা নেই। স্পেস সংকটে দু’একটির বেশী আলমিরাও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে ফ্লোর সহ যত্র তত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখতে হচ্ছে নথিপত্র। এতে মাঝে মাঝে মামলার নথিপত্র খুঁজে পেতে দীর্ঘ সময় লাগছে।

কলাপাড়া চৌকি আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট খন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, ’আমরা জেলা জজ মহোদয়কে আমাদের এ সমস্যার কথা জেলা বারের মাধ্যমে একাধিকবার জানিয়েছি।

এছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য মহোদয়কেও অবগত করেছি। কিন্তু কিছুতেই আমাদের এ সমস্যার লাঘব হচ্ছে না। তাই সরকারের কাছে আমাদের আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী মানুষের পক্ষ থেকে জোর দাবী, নতুন আদালত ভবন নির্মান করে স্বল্প সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা হোক। যাতে সরকারের প্রতি মাসে ভবন ভাড়া বাবদ অন্তত: অর্ধ লক্ষ টাকা সাশ্রয় হতে পারে।’