মোঃ হাবিবুল হাসান হাবিব, ডিমলা-নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডিমলায় বাদশা মিয়া নামে এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিজ ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে ছাত্র জীবনের অর্জিত সমস্ত একাডেমিক সার্টিফিকেট ছিড়ে ফেলে।
পড়ালেখা শেষে চাকুরী না পাওয়ায় ১৯ সেপ্টেম্বর (সোমবার) দুপুর ১২ টায় ফেসবুক লাইভে এসে এমন সিদ্ধান্ত নেয়।
জানা যায়, বাদশা মিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিন সুন্দর খাতা গ্রামের মহুবার রহমানের ছেলে ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় অভাবের সংসারে ছয় ভাই বোনের মধ্যে বাদশা মিয়া সবার বড়। তিনি ২০১৪ সালে নীলফামারী সরকারী কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে আর্থিক সংকটের কারনে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারেনি। বাদশা মিয়া ২০০৭ সালে দাখিল, ২০০৯ সালে আলিম এবং ২০১৪ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক পাশ করেন।
বাদশা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে বলে “আমার জীবনের প্রথমে ফেসবুক লাইভে আসলাম আজকে লাইভে একটি বিশেষ কারনে এসেছি সে কারনটা আজকে বলার জন্য আসলাম সেটা হচ্ছে যে, আমার অর্নাস পাশের যে সার্টিফিকেট সেটা ছিড়ার জন্য এসেছি যারা লাইভটা দেখছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তো সার্টিফিকেট ছেড়ার আগে আমার নাম পরিচয়টা দেই। আমার নাম হচ্ছে বাদশা মিয়া, বাড়ি নীলফামারী ডিমলা উপজেলায়। আমার বাবা একজন মধ্যবিত্ত কৃষক।
আমি যখন স্টুডেন্ট ছিলাম তখন আমার একটা স্বপ্ন ছিল যে পড়াশুনা শেষ করে একটি ভাল জব করবো। কিন্তু পড়াশুনা শেষ করার পর দেখি বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন, সেটা আমার অযোগ্যতার কারনে হোক আর যে কোন কারনে হোক। আমি জানি না আমার এই সার্টিফিকেট গুলা বাস্তব জীবনে কোন কাজে লাগাতে পারছি কিনা বা পারব কিনা। আর এই সার্টিফিকেট গুলার জন্যই আসলে অনেক জায়গা থেকে বিভ্রান্ত হতে হয়, আমাকে খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হয়। সার্টিফিকেট গুলো না থাকলে সব জায়গায় অংশগ্রহন করতে পারতাম। কিন্তু অর্নাস পাশের সার্টিফিকেট থাকার কারনে সব ধরনের কাজে অংশ গ্রহন করা সম্ভব হয় না। এই সার্টিফিকেট গুলো যেহেতু আমার জীবনের কাল হয়ে দাড়িয়েছে তাই সার্টিফিকেট গুলো না রাখাই ভালো। যাই হোক এবারে সার্টিফিকেট গুলো ছিড়ে ফেলবো। যেহেতু এগুলো জীবনের একটা অর্জন সে অর্জন টা ছিড়ে ফেলছি সেহতেু খারাপ লাগছে । আর কিছু বলার নাই ভালো থাকবেন সবাই” এসব বলে নিজের অর্জিত সকল সাটিফিকেট ছিড়ে ফেলে বাদশা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে নেটিজনরা বিভিন্ন মন্তব্য ও সমালোচনা করে ।