মনিরুল ইসলাম মনির, চাঁদপুর-মতলব উত্তর প্রতিনিধিঃ
শীত এলেই লেপ তোষক বানানোর ধুম পড়ে যায় দোকানে দোকানে। কিছু দিন পরেই জেঁকে বসবে শীত। এবার কার্তিকের শীতের আমেজ আগেই টের পাওয়ায় জনসাধারণ ভীড় জমাতে শুরু করেছে ও শীত জেকে বসার আগে তাই লেপ-তোষক তৈরির ধুম লেগেছে মতলব উত্তর উপজেলার সকল সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে।
ফলে লেপ-তোষকের দোকানে বাড়ছে বেচা-কেনা। এসব দোকানের কর্মচারীদের এখন অলস সময় কাটানোর একদম ফুরসত নেই। উপজেলার পৌর এলাকাসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট-বাজার ও পাড়া-মহল্লাতে লেপ-তোষক তৈরির কারিগররা এখন হাঁক-ডাক করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তুলা, লেপের কাপড়, ফোম এবং মজুরী গত বছরের তুলনায় এবার বেশী বলে জানিয়েছে বিক্রেতারা। এসব দোকানে দিন দিন বেড়েই চলছে লেপ-তোষক ক্রেতাদের ভীড়। পাশাপাশি ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোষক তৈরী কারিগরদের। ছেংগারচর বাজারের লেপ তোষক তৈরীর প্রতিটি দোকানে এখন ১৫/২০টি লেপ তোষক তৈরী হচ্ছে। এদিকে শীত বস্ত্র বিক্রির দোকানেও ভীড় ও কেনাকাটা জমে উঠতে শুরু করেছে।
উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, শুধু লেপ-তোষক তৈরিই নয়, শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে মানুষের পোশাক-পরিচ্ছদ ও ব্যবহার্য সামগ্রীতেও পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। পাতলা পোশাকের পরিবর্তে অনেকেই মোটা জামার দিকে ঝুঁকছেন। এছাড়া শীতের সময় কাঁথা, কম্বল, চাঁদর বা শাল,শীতের টুপি, হাতমোজা, মাফলার, জাজিম ও কার্পেটের ব্যবহার ও বিক্রি বেড়ে যায়। ছয় ঋতুর এই দেশে শীতের আগমনী বার্তা শীতকালে হওয়ার কথা থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তা এখন ঋতুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে না।
নতুন বাজারের বেডিং স্টোরের সত্বাধিকারী দেলোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, শীত সবে মাত্র আসতে শুরু করেছে। এর আগেই লেপ-তোষক তৈরির অর্ডারও পাচ্ছি ভাল। আমরাও ব্যস্ত সময় পার করছি। শীত বাড়ার সাথে সাথে ব্যবসা আরো বৃদ্ধি পাবে। তবে জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় তাদের ইচ্ছামতো লেপ-তোষক বানাতে পারছেন না। পুঁজি স্বল্পতার কারণে বেশি মাল তৈরি করতে পারছি না। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০টি লেপ তৈরী হয়ে থাকে। ৪-৫ হাত মাপের তৈরী লেপ ৯০০ থেকে ১৬৫০ পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে।
লেপ তোষক তৈরীর কারিগর আবদুল আউয়াল বলেন, আমি দীর্ঘকয়েক বছর যাবত লেপ তোষকের কারিগর হিসেবে কাজ করে আসছি। আমার বাবাও একজন লেপ তোষকের কারিগর ছিলেন। বাবার সুত্র ধরেই আমিও আজ চার দশক ধরে এ পেশার সাথে জড়িত রয়েছি।
সুজাতপুর বাজারে লেপ-তোষক কিনতে আসা কামাল সরকার জানান, শীত পড়তে শুরু করেছে। বেশি শীত পড়ার আগেই নতুন লেপ-তোষক তৈরি করতে এসেছি। কিন্তু তুলা, কাপড় ও কারিগরের মজুরি বেশি হওয়ায় দুটোর স্থলে একটা বানিয়ে নিলাম।