ঢাকাSaturday , 6 July 2024

কোটাবিরোধীদের নতুন কর্মসূচি ‘বাংলা ব্লকেড’ 

Zero News
July 6, 2024 6:57 pm
Link Copied!

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে শাহবাগ মোড় থেকে সরে গেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় আন্দোলনের সমন্বয়কারী ঢাবি শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামীকাল রোববার বিকেল ৩টা থেকে দেশজুড়ে ‘বাংলা ব্লকেড’ (অবরোধ) কর্মসূচি পালন করা হবে।

ঢাবির সমাজকল্যাণ বিভাগের এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, শুধু শাহবাগ মোড় নয়, রাজধানীর প্রতিটি পয়েন্টে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা নেমে এসে কর্মসূচি সফল করবেন। ঢাকার বাইরের জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করবেন।

এ সময় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলবে বলেও জানান নাহিদ ইসলাম।

এর আগে, কোটা বাতিলের দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো শনিবার বিকেলে অন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে যোগ দিতে ঢাবির বিভিন্ন হল থেকে আলাদা ব্যানারে মিছিলে নিয়ে সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে আসেন তারা। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে আসেন শিক্ষার্থীরা। এরপর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’ এমন বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।

ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ কোটা থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামছেন।

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি আরও কিছু দাবি জানাচ্ছেন। এগুলো হলো, পরবর্তী সময়ে সরকার কোটাব্যবস্থা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া, সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা, চাকরির নিয়োগের পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করার সুযোগ বন্ধ করা ও কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোয় মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।