ঢাকাWednesday , 11 September 2024

লোডশেডিং নিয়ে বাড়ছে আতঙ্ক।

Zero News
September 11, 2024 7:14 pm
Link Copied!

পিএলসি(পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ) তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার মাঝরাতে দেশে সর্বোচ্চ ২,৩১২ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে যা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে একটি রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।গত সোমবার সন্ধ্যায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দিনাজপুরের ৫২৫ মেগাওয়াট বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একমাত্র কার্যকরী ইউনিটটি যা দিনে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতো ।সেটি বন্ধ হয়ে গেলে পুরো বিদ্যুৎকেন্দ্র  অচল হয়ে পড়ে। এর ফলে বৃহত্তর রংপুর এলাকা দিনের একটা বড় সময় বিদ্যুৎহীন থাকে।

সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাটে পড়েছে রাজশাহী, রংপুর, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চল।

উৎপাদন বন্ধের কারন হিসাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনালকে দায়ী করেন। তিনি মন্তব্য করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি সময়মতো কারিগরি সহায়তা দিতে ব্যর্থ হওয়াই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়েছে।

হারবিন রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত চুক্তির বাধ্যবাধকতা মেনে চলেনি।তিনি বলেন, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি প্রযুক্তিগত ত্রুটি সারানোর জন্য দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছে।

এই এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকেরা হঠাৎ করেই বড় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন।

দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার চালকল মালিক আব্দুল হান্নান জানান, নিয়মিত বিদ্যুৎ যাওয়ার ফলে তার মিলের উৎপাদন অনেক কমে গেছে।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ছয় ঘণ্টাও থাকছে না বিদ্যুৎ ‌।      ঢাকাতেও লোডশেডিং বেড়েছে। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি ও ঢাকার পল্লী বিদ্যুৎগুলো মিলে গতকাল প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ ঘাটতিতে পড়েছে।

গত ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমাল আঘাত হানার পর থেকে প্রায় ২৫টি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ আছে।

তবে পিডিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, এফএসআরইউ চালু হলেও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের কার্গো না আসায় পরিস্থিতির এখনই উন্নতি হবার সম্ভাবনা নেই।

তিনি আরও বলেন, সরকার সম্প্রতি ক্রয় প্রক্রিয়া শুরু করেছে এবং কার্গো আসতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে।

গ্যাসের সাথে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর অপর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনকে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য দায়ী করছেন পিডিবি কর্মকর্তারা।

এদিকে, ভারতের গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রায় ৮০ কোটি ডলারের বকেয়া বিল থাকায় আদানি পিডিবির নির্দেশনা মেনে তারা প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম সরবরাহ করছে।

এর  সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা যায়  পিডিবির কাছে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার বকেয়া বিল রয়েছে, যার বেশিরভাগই ডলারে পরিশোধ করতে হবে।

ডলারের সংকটের কারণে বিল পরিশোধ আটকে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার, যা চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে কয়লা, গ্যাস ও ফার্নেস অয়েলসহ প্রাথমিক জ্বালানি আমদানি বাধাগ্রস্ত হয়েছে, যা বিদ্যুৎখাতে প্রভাব ফেলেছে।ফলে ক্রমবর্ধমান চাহিদা থাকার পরও পিডিবি উৎপাদন বাড়াতে পারেনি।