ঢাকাMonday , 30 May 2022

চৌকিদারকে পিটিয়ে  ফেন্সিডিল ছিনিয়ে নিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা হাত কাঁটা জাহিদ

Zero News
May 30, 2022 3:12 pm
Link Copied!

মোস্তাফিজুর রহমান লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় দিনে দুপুরে রবিউল ইসলাম নামে এক গ্রাম পুলিশকে (চৌকিদার) মারধর করে উদ্ধারকৃত ভারতীয় নিষিদ্ধ মাদক ফেন্সিডিল ছিনিয়ে গেছে ছাত্রলীগ নেতা জাহেদুল ইসলাম জাহিদ(হাতকাঁটা জাহিদ) ও তার ক্যাডার বাহিনী।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত রবিউল ইসলাম শুক্রবার (২৭ মে) চার জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫-৭ জনের নামে হাতীবান্ধা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার(২৬মে) দুপুরে উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিন জাওরানী এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। তবে থানায় অভিযোগ দেওয়ার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও অদৃশ্য কারণে পুলিশ অভিযোগটি এখনো নথিভুক্ত করে নি। এমনকি এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ছিনিয়ে নেওয়া ভারতীয় নিষিদ্ধ মাদক ফেন্সিডিল উদ্ধার করতে পারে নি পুলিশ।
অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের উত্তর জাওরানী এলাকার এহসান আলীর ছেলে ছাত্রলীগ নেতা জাহেদুল ইসলাম জাহিদ, জাহিদের ভাই মামুন, একই এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে জুয়েল ও নরুল ইসলামের ছেলে রুহুল।এছাড়া জাহেদুল ইসলাম জাহিদ উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের মধ্যম কাদমা এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে। এছাড়া সে ভেলাগুড়ি ইউনিয়নে গ্রাম পুলিশ হিসেবে কর্মরত আছেন।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাত্রলীগ নেতা জাহেদুলের ভাই মামুন ও জুয়েল মোটর সাইকেলে করে বস্তা ভর্তি ফেন্সিডিল নিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা কালীগঞ্জের দিকে যাচ্ছিলেন। গ্রাম পুলিশ রবিউলের উপস্থিতি বুঝতে পেয়ে মামুন ও জুয়েল মোটরসাইকেলটি ফেলে রেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় গ্রাম পুলিশ স্থানীয়দের উপস্থিতিতে রবিউল মোটরসাইকেলে থাকা ব্যাগটি খুললে তার ভিতরে ভারতীয় নিষিদ্ধ মাদক ফেন্সিডিল দেখতে পেয়ে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে ফোন করে জানান। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত মাদকগুলো ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হবে এমতাবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ তার ভাই মামুন ও অভিযুক্ত তার ক্যাডার বাহিনী গ্রাম পুলিশ রবিউলের উপর হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করে উদ্ধারকৃত ফেন্সিডিল ও মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নিয়ে ছিটকে পড়ে। পরে স্থানীয়রা ওই গ্রাম পুলিশকে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।
এদিকে খোজ নিয়ে জানাগেছে, জাহেদুল ইসলাম জাহিদ চিহ্নিত একজন চোরাকারবারি। সে মাদক, গরু পাচার, নারী শিশু পাচারসহ সকল কারবারি করে থাকে। সীমান্ত এলাকায় সব ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে সে ও তার ক্যাডার বাহিনী জড়িত। ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় সেই পদের অপব্যবহার করে সব ধরনের অকর্ম চালাচ্ছেন তিনি। তার বিষয়ে কেউ কোন কথা বলতে পারে না। কেউ তার বিষয়ে মুখ খুললে বিভিন্নভাবে তাকে মামলায় জড়ায় এই জাহিদ। এলাকায় হাত কাঁটা জাহিদ নামে সে পরিচিত।
এ বিষয়ে গ্রাম পুলিশ রবিউল ইসলাম বলেন, জহিদ ও তার ভাই এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারি। আমি বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই এলাকায় যাচ্ছিলাম। এ সময় জাহিদের ভাই মামুন ও জুয়েল মোটরসাইকেল যোগে আসতেছিলো। আমাকে দেখেই তারা মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়। আমি স্থানীয়দের উপস্থিতিতে সেই মোটরসাইকেলে থাকা ব্যাগ থেকে ফেন্সিডিল উদ্ধার করে চেয়ারম্যানকে জানাই। এর কিছুক্ষন পর জাহিদ তার ভাই মামুন ও মাদক ব্যবসায়ীরা আমাকে মারধর করে উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেল ও ফেন্সিডিলগুলো নিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি মিথ্যা বলে ফোনটি কেটে দেয়। ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মন্ডল বলেন, এ ঘটনায় গ্রাম পুলিশকে থানায় লিখিত অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। হাতীবান্ধা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফাহিম শাহরিয়ার খান জিহান বলেন, বিষয়টি জানা নেই। অভিযোগ পেলে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, গ্রাম পুলিশ  থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি  নিয়ে তদন্ত চলছে তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।