মো.নাহিদুল হক, কলাপাড়া প্রতিনিধিঃ
ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে লন্ডভন্ড কলাপাড়া উপজেলা। ঝড় থেমে গেলেও উপকূলে চলছে দুর্গত মানুষের আহাজারি। শত শত ঘর-বাড়ী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত, পরিবার পরিজন নিয়ে কেউ খোলা আকাশের নিচে কেউবা মুজিব কেল্লায় আশ্রয় নিয়েছে।
আবাদী জমি পানিতে নিমজ্জিত,ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের সবজি বাগান। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার পুকুর ও মাছের ঘের। বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। উপড়ে পড়েছে অগনিত গাছপালা, যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা সড়ক থেকে গাছপালা অপসারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন দিনভর। বিদ্যুৎ ও মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সমগ্র উপজেলায়। কলাপাড়া পৌর শহরের নাগরিকরা পানি সেবা পাচ্ছেন না গত দুই দিন ধরে। উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে শুকনো ও রান্না করা খাবার দুর্গত এসব মানুষের মাঝে সরবরাহ করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে কলাপাড়ায় দুর্গত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার ১৩০ জনে। সম্পূর্ণ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে ১৪০টি এবং আংশিক বিধ্বস্ত ৬২০টি। বেড়িবাঁধের ২২ টি স্পটে ৯.১৯ কি. মি. বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার ২৪৬৫ টি পুকুর এবং ৭৭৮ টি ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। বিশ হাজার হেক্টর আবাদী জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষকের করলা, ঝিঙ্গা, ঢেঁড়স, পুঁই শাক, গিমা কলমী শাক, চিচিঙ্গা, শসা, কলা ও আমের বাগান।
কলাপাড়া দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান, দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা নিরূপণে কাজ চলমান রয়েছে। বন বিভাগ, কৃষি, শিক্ষা, এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে লিখিতভাবে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রীর সার্বক্ষণিক তদারকিতে আমরা দুর্গত মানুষকে সহায়তা করে যাচ্ছি।
কলাপাড়া ইউএনও মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা দুর্গত মানুষের জন্য ১৩০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৬ লক্ষ টাকা, শুকনো খাবার বরাদ্দ পেয়েছি। প্রয়োজনে চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া যাবে। এছাড়া দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মো.মহিববুর রহমান মহোদয় সার্বক্ষণিক কলাপাড়ার দুর্গত মানুষের খোঁজ খবর রাখছেন।